লস এঞ্জেলেসের দাবানল: আল্লাহর গজব নাকি প্রাকৃতিক বিপর্যয়?

বিশ্বজুড়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও দুর্যোগগুলো মানবজাতির জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে শিক্ষা এবং সতর্কতার নিদর্শন হতে পারে। সাম্প্রতিক কালে লস এঞ্জেলেসে বিধ্বংসী দাবানল হাজার হাজার একর জমি পুড়িয়ে দিয়েছে। গাছপালা, বাড়িঘর, এবং সম্পদ ধ্বংস হয়েছে। অনেকেই এই দুর্যোগকে শুধুমাত্র আবহাওয়ার পরিবর্তন বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে বিবেচনা করছেন। তবে একজন মুমিন হিসেবে আমাদের এই ধরনের দুর্যোগের পেছনে আধ্যাত্মিক ও নৈতিক শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত।
পবিত্র কুরআন এবং হাদিসে উল্লেখিত রয়েছে যে, যখন কোনো জাতি সীমালঙ্ঘন করে এবং দমন-পীড়নে লিপ্ত হয়, তখন আল্লাহ তাআলা তাদের উপর শাস্তি বা গজব প্রেরণ করেন। কুরআনে আল্লাহ বলেন,
“আর যদি জনপদসমূহের লোকজন ঈমান আনত এবং আল্লাহভীরু হতো, তবে অবশ্যই আমি তাদের প্রতি আসমান ও জমিন হতে বরকতের দ্বারসমূহ উন্মুক্ত করে দিতাম। কিন্তু তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করল, ফলে আমি তাদের পাকড়াও করলাম তাদের কৃতকর্মের জন্য।”
(সূরা আল-আ'রাফ, আয়াত ৯৬)মুসলিম বিশ্ব রিলেটেড নিউজ
মধ্যপ্রাচ্যে মুসলিম নিধনযজ্ঞে ইসরাইলের ভূমিকা সর্বজনবিদিত। ফিলিস্তিনের নিরপরাধ মানুষদের হত্যা করতে ইসরাইল আধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করে, যা মূলত আমেরিকার দেওয়া। আমেরিকা প্রতিবছর ইসরাইলকে বিলিয়ন ডলার সহায়তা এবং অস্ত্র সরবরাহ করে, যা গাজাবাসীর জন্য ধ্বংসাত্মক। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বারবার জালিমদের প্রতি কঠোর শাস্তির কথা বলেছেন।
দাবানল, ভূমিকম্প, এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলো শুধু প্রাকৃতিক কারণেই ঘটে না, বরং তা আল্লাহর নির্দেশে হয়ে থাকে। হাদিসে এসেছে,
“যখন কোনো সম্প্রদায় আল্লাহর সীমা লঙ্ঘন করে, তখন তাদের মধ্যে এমন বিপর্যয় নেমে আসে যা আগে কখনো দেখা যায়নি।” (তিরমিজি)
লস এঞ্জেলেসের এই দাবানলকে কেউ কেউ কেবল জলবায়ু পরিবর্তনের ফল হিসেবে দেখছেন, তবে মুমিনের দৃষ্টিতে এটা হতে পারে আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি গজব, যা জালিম জাতির জন্য সতর্কবার্তা।
১. ইমান ও তাকওয়া অবলম্বন করা: আল্লাহর গজব থেকে বাঁচতে আমাদের উচিত আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা।
২. জুলুম ও পাপাচার থেকে বিরত থাকা: সমাজে জুলুম ও অন্যায়ের প্রতিরোধে ভূমিকা রাখা।
৩. অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো: গাজা ও ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের জন্য দোয়া করা।
লস এঞ্জেলেসের দাবানল আমাদের জন্য সতর্কবার্তা হতে পারে, যা আল্লাহর ন্যায় বিচার ও শক্তিমত্তার নিদর্শন। মুসলিম হিসেবে আমাদের উচিত এই ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং বিশ্বব্যাপী নির্যাতিত মুসলমানদের সাহায্যে হাত বাড়ানো। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে জালিমদের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন এবং সঠিক পথে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।